পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪১, নিখোঁজ অর্ধশত

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে প্রায় অর্ধশত মানুষ। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতকাল রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার তুষার কান্তি রায় বলেন, ভোর ৬টা থেকে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহীর তিনটি ডুবুরি ইউনিট উদ্ধার কাজ করছে। ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে। অতীত অভিজ্ঞতা ও নদীর প্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে, ভুক্তভোগীদের কেউ দুর্ঘটনাস্থলে নেই। তারপরও প্রত্যেক ভুক্তভোগীকে উদ্ধারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আজ সকাল থেকে উদ্ধার হওয়া ১৬ মরদেহের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এর আগে গতকাল রোববার নারীও শিশুসহ ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তারা হলেন- শ্যামলী রানী (১৪), লক্ষী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৩), পিয়ন্ত (২.৫), রুপালী ওরফে খুকি রানী (৩৫), প্রমিলা রানী (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানী (৬০), ফাল্গুনী (৪৫), প্রমিলা দেবী (৭০), জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), তারা রানী (২৫), সনেকা রানী (৬০), সফলতা রানী (৪০), হাশেম আলী (৭০), বিলাস চন্দ্র (৪৫), শ্যামলী রানী ওরফে শিমুলি (৩৫), উষশী (৮), তনুশ্রী (৫), শ্রেয়শী, প্রিয়ন্তী (৮), সনেকা রানী (৬০) ও ব্রজেন্দ্রনাথ (৫৫)।
গতকাল রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় পার্শ্ববর্তী বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরে আয়োজিত মহালয়ার উৎসবে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকার পুণ্যার্থীরা করতোয়া নদী পারাপারের জন্য মাড়েয়া আউলিয়া ঘাটে উপস্থিত হন। এইসময় ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌকাটি যাত্রা শুরু করলে মাঝপথে মোড় নিতে গিয়ে ডুবে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, নৌকায় শতাধিক যাত্রী ছিল। এই দুর্ঘটনায় গতকাল রাতেই ১৭ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে উদ্ধার করেন উদ্ধারকারী দল। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নিখোঁজদের উদ্ধার করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা উদ্ধার কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
এই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান ও পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বলেন, এখন পর্যন্ত ৪০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকজন বাদে বাকি সবার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের সৎকারের জন্য ২০ হাজার টাকা ও আহতদের পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।