০৫:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩

সংবাদ সম্মেলন করে পছন্দের মানুষকে বিয়ের কথা জানালেন ফাতেমা

নিজস্ব প্রতিনিধি || প্রথম সংবাদ

পছন্দের মানুষকে বিয়ে করে সংবাদ সম্মেলন করেন এই দম্পতি। মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরের আসাম কলোনি এলাকায় ছবি: প্রথম সংবাদ

বিয়েতরুণীর অমতে সৌদি আরবে নিয়ে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। সেই সংসার না করে দেড় বছর পর দেশে এসে পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করেছেন।

বাবার বাড়ি থেকে রাতে পালিয়ে বিয়ে করে সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁকে কেউ অপহরণ করেননি। তিনি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরের আসাম কলোনি এলাকায় সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এই দম্পতি।

এই তরুণীর নাম ফাতেমা তাবাসসুম খান (২১)। বাড়ি রাজশাহী নগরের রামচন্দ্রপুর বউবাজার এলাকায়। তাঁর স্বামীর নাম ফজলে রাব্বী (২৬)। তাঁর বাড়িও একই এলাকায়। ফজলে রাব্বী ব্যবসা করেন। চার বছর ধরে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক।

ফজলে রাব্বী জানান, ফাতেমাকে বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। তাই তিনি এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধু গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ফাতেমাকে বাড়ি থেকে এনেছেন। তারপর রাতেই তাঁরা বিয়ে করেছেন। কেন এই সংবাদ সম্মেলন, জানতে চাইলে ফাতেমা তাবাসসুম খান বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসেছি। এখন শুনছি, আমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অপহরণের মামলা করা হচ্ছে। আমি জানিয়ে দিচ্ছি, আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।’

ফজলে রাব্বী জানান, চার বছর ধরে তাঁদের প্রেম। কিন্তু ফাতেমার মা–বাবা বিয়ে দিতে চাননি। মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে। এতেও তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট করতে না পেরে ২০১৯ সালের দিকে ফাতেমাকে সৌদি আরবে নিয়ে জোর করে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ফাতেমা সেখানে সংসার করতে পারেননি। দেড় বছর পর ২০২১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এর পর থেকে বাড়িতে তাঁর ওপর নির্যাতন চলছিল।

নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে ফাতেমার ছোটভাই তামীম খান প্রথম সংবাদকে বলেন, তাঁর বোনকে কখনো গায়ে হাত তোলা হয়নি। নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই ছেলে ১০-১৫ জন লোক নিয়ে এসে ঘরের দরজা ভেঙে টেনে–হিঁচড়ে তাঁর বোনকে তুলে নিয়ে গেছে। তাঁর বোনের সংবাদ সম্মেলনের কথা শুনে তিনি বলেন, এখন তাঁর বোনকে জিম্মি করে ফেলা হয়েছে। যা শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, হয়তো তাই বলছে।

ফজলে রাব্বী বলেন,‘এখন ফাতেমার পরিবার থেকে হয়তো অপহরণের মামলা করা হবে। পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করবে। জেল খাটতে হবে। এর সবই জানি। সবকিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখছি। আর আস্থা রাখছি ফাতেমার ওপর। মামলা হলে ফাতেমা আদালতে গিয়ে বলবে যে কেউ তাকে অপহরণ করে আনেনি। প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে সে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসে বিয়ে করেছে।’

এ বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম আজ বিকেলে প্রথম সংবাদকে বলেন, রাতেই টেলিফোনে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় : ১১:৪৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩
৩০৬ বার পড়া হয়েছে

সংবাদ সম্মেলন করে পছন্দের মানুষকে বিয়ের কথা জানালেন ফাতেমা

আপডেট সময় : ১১:৪৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩

বিয়েতরুণীর অমতে সৌদি আরবে নিয়ে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। সেই সংসার না করে দেড় বছর পর দেশে এসে পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করেছেন।

বাবার বাড়ি থেকে রাতে পালিয়ে বিয়ে করে সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁকে কেউ অপহরণ করেননি। তিনি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরের আসাম কলোনি এলাকায় সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এই দম্পতি।

এই তরুণীর নাম ফাতেমা তাবাসসুম খান (২১)। বাড়ি রাজশাহী নগরের রামচন্দ্রপুর বউবাজার এলাকায়। তাঁর স্বামীর নাম ফজলে রাব্বী (২৬)। তাঁর বাড়িও একই এলাকায়। ফজলে রাব্বী ব্যবসা করেন। চার বছর ধরে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক।

ফজলে রাব্বী জানান, ফাতেমাকে বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। তাই তিনি এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধু গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ফাতেমাকে বাড়ি থেকে এনেছেন। তারপর রাতেই তাঁরা বিয়ে করেছেন। কেন এই সংবাদ সম্মেলন, জানতে চাইলে ফাতেমা তাবাসসুম খান বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসেছি। এখন শুনছি, আমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অপহরণের মামলা করা হচ্ছে। আমি জানিয়ে দিচ্ছি, আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।’

ফজলে রাব্বী জানান, চার বছর ধরে তাঁদের প্রেম। কিন্তু ফাতেমার মা–বাবা বিয়ে দিতে চাননি। মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে। এতেও তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট করতে না পেরে ২০১৯ সালের দিকে ফাতেমাকে সৌদি আরবে নিয়ে জোর করে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ফাতেমা সেখানে সংসার করতে পারেননি। দেড় বছর পর ২০২১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এর পর থেকে বাড়িতে তাঁর ওপর নির্যাতন চলছিল।

নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে ফাতেমার ছোটভাই তামীম খান প্রথম সংবাদকে বলেন, তাঁর বোনকে কখনো গায়ে হাত তোলা হয়নি। নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই ছেলে ১০-১৫ জন লোক নিয়ে এসে ঘরের দরজা ভেঙে টেনে–হিঁচড়ে তাঁর বোনকে তুলে নিয়ে গেছে। তাঁর বোনের সংবাদ সম্মেলনের কথা শুনে তিনি বলেন, এখন তাঁর বোনকে জিম্মি করে ফেলা হয়েছে। যা শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, হয়তো তাই বলছে।

ফজলে রাব্বী বলেন,‘এখন ফাতেমার পরিবার থেকে হয়তো অপহরণের মামলা করা হবে। পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করবে। জেল খাটতে হবে। এর সবই জানি। সবকিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখছি। আর আস্থা রাখছি ফাতেমার ওপর। মামলা হলে ফাতেমা আদালতে গিয়ে বলবে যে কেউ তাকে অপহরণ করে আনেনি। প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে সে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসে বিয়ে করেছে।’

এ বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম আজ বিকেলে প্রথম সংবাদকে বলেন, রাতেই টেলিফোনে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।