০৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩

সফল মাল্টা চাষি আল-আমিন এখন যে কারণে হতাশ

নিজস্ব প্রতিনিধি

সফল মাল্টা চাষি আল-আমিন এখন যে কারণে হতাশ

চৈত্র মাসের খরায় ঝরেছে গুটি মাল্টা। তারপর হয়েছে ছত্রাকের আক্রমণ। এ দুই কারণে আল-আমিনের মাল্টা বাগানে নেই আগের ফলের সমাহার। এর আগে অনেক সুনাম ও খ্যাতি ছিল মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আল-আমিনের এই মাল্টা বাগানের।

বিগত দুই বছর যেখানে সবুজ পাতার ফাঁকে ডালে ডালে ঝুলে থাকত পাকা-আধাপাকা মাল্টা। ফলের ভারে নুয়ে পড়তো গাছের ডালপালা। সেখানে আর আগের চিত্র নেই।

সফল মাল্টা চাষি আল-আমিন এখন অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত। চার বছর আগে জেলার রাজনগর উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের নন্দিউড়া গ্রামের আল-আমিন শখেরবশে, কৃষিবিদ শেখ আজিজুর রহমানের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে মাটি উচুঁ করে বেড তৈরি করে মাল্টা চাষ শুরু করেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রর্দশনী দিয়ে আল-আমীনকে মাল্টা চাষে উৎসাহিত করা হয়। তিনি আত্মনির্ভরশীল হয়েছিলেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ বছর তার ক্ষতি হয়েছে।

২০২১ সালে ৩ টন মাল্টা উৎপাদন হয়েছিল আল-আমিনের। ২ লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছিল।
প্রতিবছর মাল্টার উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়ায় আল-আমিন অল্প পরিশ্রমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেন। কিন্তু চলতি বছর লোকশানের মুখে পড়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

আল-আমিন প্রভাত বাণীকে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে বিভিন্ন জাতের ফলে ফরমালিন ব্যবহারের হিড়িক পড়ে। যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। মানুষ নিরাপদ ফল খাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিল। ভেজালমুক্ত ফল উপহার দেওয়ার কথা চিন্তা করেই কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে মাল্টার বাগান করেছি। অল্প পরিশ্রমে কম খরচে মাল্টা চাষ করে লাভবান হয়ে ছিলাম। কিন্তু এ বছর দীর্ঘ খরা আর ছত্রাকের আক্রমণে পাতা হলুদ হওয়ায় মাল্টা গাছে খুবই কম ফল এসেছে। যা আমাকে হতাশ করেছে।

আল-আমিনের বাগানে গিয়ে দেখা যায় বারি-১ থাইল্যান্ড জাতের ২০০টি মাল্টার গাছ রয়েছে। অল্প কিছু গাছে ফল ধরেছে। বাকিগুলো ফল শূন্য হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে।

রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, মাল্টা চাষি আল-আমিন সফল হলেও এ বছর প্রকৃতিক দুর্যোগে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত। আগামী বছর ফল ধরার শুরুতে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিতে বলেছি।

মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক সামছ উদ্দিন আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় মৌলভীবাজারের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। আমরা আল-আমিনের বাগান পরিদর্শন করেছি। পরিচর্যা আর সুষম সার প্রয়োগ না করায় তার বাগানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ অঞ্চলের মাটিতে অম্লখারত্ব থাকায় মাল্টা চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার রাজনগর, জুড়ী, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া উপজেলায় বেশ কিছু মাল্টার বাগান গড়ে উঠেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় : ১২:৫৯:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
১৯৮ বার পড়া হয়েছে

সফল মাল্টা চাষি আল-আমিন এখন যে কারণে হতাশ

আপডেট সময় : ১২:৫৯:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

চৈত্র মাসের খরায় ঝরেছে গুটি মাল্টা। তারপর হয়েছে ছত্রাকের আক্রমণ। এ দুই কারণে আল-আমিনের মাল্টা বাগানে নেই আগের ফলের সমাহার। এর আগে অনেক সুনাম ও খ্যাতি ছিল মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আল-আমিনের এই মাল্টা বাগানের।

বিগত দুই বছর যেখানে সবুজ পাতার ফাঁকে ডালে ডালে ঝুলে থাকত পাকা-আধাপাকা মাল্টা। ফলের ভারে নুয়ে পড়তো গাছের ডালপালা। সেখানে আর আগের চিত্র নেই।

সফল মাল্টা চাষি আল-আমিন এখন অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত। চার বছর আগে জেলার রাজনগর উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের নন্দিউড়া গ্রামের আল-আমিন শখেরবশে, কৃষিবিদ শেখ আজিজুর রহমানের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে মাটি উচুঁ করে বেড তৈরি করে মাল্টা চাষ শুরু করেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রর্দশনী দিয়ে আল-আমীনকে মাল্টা চাষে উৎসাহিত করা হয়। তিনি আত্মনির্ভরশীল হয়েছিলেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ বছর তার ক্ষতি হয়েছে।

২০২১ সালে ৩ টন মাল্টা উৎপাদন হয়েছিল আল-আমিনের। ২ লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছিল।
প্রতিবছর মাল্টার উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়ায় আল-আমিন অল্প পরিশ্রমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেন। কিন্তু চলতি বছর লোকশানের মুখে পড়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

আল-আমিন প্রভাত বাণীকে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে বিভিন্ন জাতের ফলে ফরমালিন ব্যবহারের হিড়িক পড়ে। যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। মানুষ নিরাপদ ফল খাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিল। ভেজালমুক্ত ফল উপহার দেওয়ার কথা চিন্তা করেই কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে মাল্টার বাগান করেছি। অল্প পরিশ্রমে কম খরচে মাল্টা চাষ করে লাভবান হয়ে ছিলাম। কিন্তু এ বছর দীর্ঘ খরা আর ছত্রাকের আক্রমণে পাতা হলুদ হওয়ায় মাল্টা গাছে খুবই কম ফল এসেছে। যা আমাকে হতাশ করেছে।

আল-আমিনের বাগানে গিয়ে দেখা যায় বারি-১ থাইল্যান্ড জাতের ২০০টি মাল্টার গাছ রয়েছে। অল্প কিছু গাছে ফল ধরেছে। বাকিগুলো ফল শূন্য হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে।

রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, মাল্টা চাষি আল-আমিন সফল হলেও এ বছর প্রকৃতিক দুর্যোগে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত। আগামী বছর ফল ধরার শুরুতে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিতে বলেছি।

মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক সামছ উদ্দিন আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় মৌলভীবাজারের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। আমরা আল-আমিনের বাগান পরিদর্শন করেছি। পরিচর্যা আর সুষম সার প্রয়োগ না করায় তার বাগানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ অঞ্চলের মাটিতে অম্লখারত্ব থাকায় মাল্টা চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার রাজনগর, জুড়ী, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া উপজেলায় বেশ কিছু মাল্টার বাগান গড়ে উঠেছে।