সুনামগঞ্জ হাসপাতালে তিন দিনে ভর্তি ৩০০ শিশু

শীতের শুরুতেই সুনামগঞ্জে ঠান্ডাজনিত রোগের সংক্রমণ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। তিন দিনে ৩০০ শিশু চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ভর্তি হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে। অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠান্ডা আবহাওয়া বইতেই সুনামগঞ্জে রোগবালাই বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুদের সংখ্যা বেশি। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ার ও শ্বাসকষ্টে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
ভালো চিকিৎসার আশায় সবাই ছুটছেন সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে। কিন্তু শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করে বড় বিপাকে পড়েছেন স্বজনরা।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে ভিড়ে ঠাসা। বেডে জায়গা না পেয়ে অনেকে মেঝে ও ওয়ার্ডের বাইরে চারদিকে বিছানা পেতে এলোমেলোভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে। একবেড শেয়ার করে তিন-চার শিশুরও চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে। রোগীর চাপ বেশি থাকায় দুর্গন্ধযুক্ত-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি হয়েছে শিশু ওয়ার্ডে।
হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা জানান, শিশু ওয়ার্ড আছে দুটি। বেড আছে ৮০টি। গত তিন দিনে মোট ৩০০ শিশু ভর্তি হয়েছে। এরা সবাই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
সুনামগঞ্জের বনগাঁও থেকে আসা শিশু রাসেলের মা রাবেয়া খাতুন বলেন, এক বছরের ছেলেকে নিয়ে গত তিন দিন ধরে ভর্তি হয়েছি। অন্য আরও দুই শিশু রোগীর সঙ্গে ছেলেকে একই বেডে রেখেছি। বেড শেয়ার করতে গিয়ে বসতেও পারছি না।’
রোগী তাজিয়া খাতুনের মা জুলেখা খাতুন বললেন, ‘আমার মেয়ে নিউমনিয়ায় আক্রান্ত। গত সাতদিন ধরে এক বেডে দুজন শেয়ার করে আছি। দিনে যেমন তেমন, রাতে বসে কাটাতে হয়।’
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী ডা. সৈকত দাস প্রভাত বাণীকে বলেন, জ্বর-কাশি হলেই আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে অধিকাংশ শিশু বাড়িতেই সুস্থ হতে পারে। আমাদের কাছে রোগী এলে নিউমোনিয়া হলেই হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিই।
তিনি আরও বলেন, বেডের তুলনায় হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। এ জন্য চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিছুর রহমান প্রভাত বাণীকে বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য জ্বরের রোগী বেশি। আমাদের চিকিৎসক কর্মচারীরা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।