০৪:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩

সোনালী ব্যাংকের খালি পে-অর্ডার প্রতারকচক্রের হাতে, পিয়ন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিনিধি

সোনালী ব্যাংকের খালি পে-অর্ডার প্রতারকচক্রের হাতে, পিয়ন গ্রেফতার

সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম চকবাজার শাখার খালি পে-অর্ডার গেছে প্রতারকচক্রের হাতে। সেই খালি পে-অর্ডার জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দেওয়া হয় এক গ্রাহকের হাতে। এ ধরনের একটি জালিয়াতির ঘটনায় এক ভুক্তভোগীর মামলায় আবদুস ছাত্তার ওরফে মামুন (৪৫) নামের সোনালী ব্যাংকের চকবাজার শাখার এক পিয়নকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন গ্রেফতার আবদুস ছাত্তার। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গত ২৯ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে রাউজান বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আবদুস ছাত্তার রাউজান পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামের মুকিম বাড়ির মৃত আবুল বশরের ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের এসআই ফজলুল করিম প্রভাত বাণীকে বলেন, নগরীর কোতোয়ালী থানায় ২০২০ সালের ১৪ জুলাই দায়ের হওয়া একটি ব্যাংকের পে-অর্ডার জালিয়াতির মামলায় সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখার পিয়ন আবদুস ছাত্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি পে-অর্ডার জালিয়াতির বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে ২০২০ সালে ঘটনার মূলহোতা ফারুক বিন জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ফারুকের বিরুদ্ধে ১৭টির মতো জালিয়াতির মামলা রয়েছে।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, বায়েজিদ এলাকার ব্যবসায়ী মো. মোজাহের মিয়া (৭০) ২০২০ সালের ১৪ জুলাই সিএমপির কোতোয়ালী থানায় একটি জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা করেন। ওই মামলা তদন্তে নামে পিবিআই। মামলার পরপরই আসামি ফারুক বিন জামানকে গ্রেফতার করে পিবিআই টিম।

জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক পিবিআইয়ের তদন্তকারীদের জানান, সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখার পিয়ন আবদুস ছাত্তার ও তার আরেক সহযোগী মো. জাহাঙ্গীর সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখার দুটি সরকারি খালি পে-অর্ডার চুরি করে ফারুক বিন জামানের কাছে বিক্রি করে। ফারুক বিন জামান পরে ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তাদের সই জালিয়াতি করে ২০২০ সালের ১২ জুলাই ৩৭ লাখ ৩১ হাজার টাকার পে-অর্ডার তৈরি করে ভুক্তভোগী মোজাহার মিয়াকে দেন। মোজাহের মিয়া প্লাস্টিক দানা কিনে বিক্রেতাকে পে-অর্ডারটি দেন। পরে পে-অর্ডারটি আগ্রাবাদ এক্সিম ব্যাংকে বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে নগদায়নের জন্য গেলে সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখা পে-অর্ডারটি তাদের নয় বলে জানায়। এরপর ভুক্তভোগী থানায় মামলা করেন।

ব্যাংকের খালি পে-অর্ডার কীভাবে জালিয়াতচক্রের কাছে গেলো সে বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের এসআই ফজলুল করিম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। সোনালী ব্যাংক থেকে খালি পে-অর্ডার কীভাবে জালিয়াতচক্রের কাছে গেছে, এতে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশ কিংবা গাফিলতি রয়েছে কি না সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের অন্য কারও যোগসাজশের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় : ০২:২০:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২
১৮৮ বার পড়া হয়েছে

সোনালী ব্যাংকের খালি পে-অর্ডার প্রতারকচক্রের হাতে, পিয়ন গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০২:২০:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২

সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম চকবাজার শাখার খালি পে-অর্ডার গেছে প্রতারকচক্রের হাতে। সেই খালি পে-অর্ডার জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দেওয়া হয় এক গ্রাহকের হাতে। এ ধরনের একটি জালিয়াতির ঘটনায় এক ভুক্তভোগীর মামলায় আবদুস ছাত্তার ওরফে মামুন (৪৫) নামের সোনালী ব্যাংকের চকবাজার শাখার এক পিয়নকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন গ্রেফতার আবদুস ছাত্তার। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গত ২৯ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে রাউজান বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আবদুস ছাত্তার রাউজান পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামের মুকিম বাড়ির মৃত আবুল বশরের ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের এসআই ফজলুল করিম প্রভাত বাণীকে বলেন, নগরীর কোতোয়ালী থানায় ২০২০ সালের ১৪ জুলাই দায়ের হওয়া একটি ব্যাংকের পে-অর্ডার জালিয়াতির মামলায় সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখার পিয়ন আবদুস ছাত্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি পে-অর্ডার জালিয়াতির বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে ২০২০ সালে ঘটনার মূলহোতা ফারুক বিন জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ফারুকের বিরুদ্ধে ১৭টির মতো জালিয়াতির মামলা রয়েছে।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, বায়েজিদ এলাকার ব্যবসায়ী মো. মোজাহের মিয়া (৭০) ২০২০ সালের ১৪ জুলাই সিএমপির কোতোয়ালী থানায় একটি জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা করেন। ওই মামলা তদন্তে নামে পিবিআই। মামলার পরপরই আসামি ফারুক বিন জামানকে গ্রেফতার করে পিবিআই টিম।

জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক পিবিআইয়ের তদন্তকারীদের জানান, সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখার পিয়ন আবদুস ছাত্তার ও তার আরেক সহযোগী মো. জাহাঙ্গীর সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখার দুটি সরকারি খালি পে-অর্ডার চুরি করে ফারুক বিন জামানের কাছে বিক্রি করে। ফারুক বিন জামান পরে ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তাদের সই জালিয়াতি করে ২০২০ সালের ১২ জুলাই ৩৭ লাখ ৩১ হাজার টাকার পে-অর্ডার তৈরি করে ভুক্তভোগী মোজাহার মিয়াকে দেন। মোজাহের মিয়া প্লাস্টিক দানা কিনে বিক্রেতাকে পে-অর্ডারটি দেন। পরে পে-অর্ডারটি আগ্রাবাদ এক্সিম ব্যাংকে বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে নগদায়নের জন্য গেলে সোনালী ব্যাংক চকবাজার শাখা পে-অর্ডারটি তাদের নয় বলে জানায়। এরপর ভুক্তভোগী থানায় মামলা করেন।

ব্যাংকের খালি পে-অর্ডার কীভাবে জালিয়াতচক্রের কাছে গেলো সে বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের এসআই ফজলুল করিম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। সোনালী ব্যাংক থেকে খালি পে-অর্ডার কীভাবে জালিয়াতচক্রের কাছে গেছে, এতে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশ কিংবা গাফিলতি রয়েছে কি না সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের অন্য কারও যোগসাজশের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।